বেদে জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা
বেদে জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ । সমাজসেবা অধিদফতরের জরিপমতে বাংলাদেশে প্রায় ৭৫,৭০২ জন বেদে জনগোষ্ঠী রয়েছে। যাযাবর জনগোষ্ঠীই বেদে সম্প্রদায় হিসেবে পরিচিত। বেদে জনগোষ্ঠীর শতকরা ৯৯ ভাগ মুসলিম এবং শতকরা ৯০ ভাগ নিরক্ষর। ৮টি গোত্রে বিভক্ত বেদে জনগোষ্ঠীর মধ্যে মালবেদে, সাপুড়িয়া, বাজিকর, সান্দার, টোলা, মিরশিকারী, বরিয়াল সান্দা ও গাইন বেদে ইত্যাদি। এদের প্রধান পেশা হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসা, তাবিজ-কবজ বিক্রি, সর্প দংশনের চিকিৎসা, সাপ ধরা, সাপের খেলা দেখানো, সাপ বিক্রি, আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য সেবা, শিংগা লাগানো, ভেষজ ঔষধ বিক্রি, কবিরাজি, বানর খেলা, যাদু দেখানো প্রভৃতি।
২০১২-২০১৩ অর্থবছরে পাইলট কর্মসূচির মাধ্যমে ৭টি জেলায় এ কার্যক্রম শুরু হয়। পাইলট কার্যক্রমভুক্ত ৭টি জেলা হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, পটুয়াখালী, নওগাঁ, যশোর ,বগুড়া এবং হবিগঞ্জ । বর্তমানে ৬৪ জেলায় এ কর্মসূচি চালু রয়েছে। বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে একই কর্মসূচীর আওতায় সুবিধা প্রদান করা হতো কিন্তু ২০১৯-২০ অর্থবছর হতে এই দুই জনগোষ্ঠীকে আলাদা আলাদা কর্মসূচীর নামে সুবিধা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। একটি হলো বেদে জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচী, অপরটি অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচী।
বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের অঙ্গিকার হিসেবে শেরপুর জেলায় ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশেষ এই ভাতাভোগীর সংখ্যা ৮ জন এবং জনপ্রতি মাসিক ভাতার হার ৫০০ টাকায় উন্নীত করা হয়। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিবিড় তদারকি এবং সমাজসেবা অধিদফতরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রমে বিশেষ এ ভাতা বিতরণে শতভাগ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
বর্তমান সরকারের সময় বেদে জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা কার্যক্রমে অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা হল, বিদ্যমান বাস্তবায়ন নীতিমালা সংশোধন করে যুগোপযোগীকরণ, উপকারভোগী নির্বাচনে স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্তকরণ। এছাড়া ১০ টাকার বিনিময়ে সকল ভাতাভোগীর নিজ নামে ব্যাংক হিসাব খুলে ভাতার অর্থ পরিশোধ করা।
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য :
১। ৫০ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সের অক্ষম ও অসচ্ছল বেদে জনগোষ্ঠীকে বিশেষ ভাতা জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা প্রদান।
২। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মক্ষম বেদে জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধি ও আয়বর্ধনমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে তাদের সমাজের মূলস্রোতধারায় আনয়ন ;
৩। প্রশিক্ষণোত্তর পুর্নবাসন সহায়তা ১০,০০০/-(দশ হাজার) টাকা।
সেবা প্রাপ্তির স্থান/অফিসের নাম:
উপজেলা/শহর সমাজসেবা অফিস
দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা / কর্মচারী:
উপজেলা / শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা
সেবা প্রদান পদ্ধতি (সংক্ষেপে):
বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে উপজেলা / শহর সমাজসেবা অফিসার বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেন। অত:পর নির্ধারিত ফরমে আগ্রহী ব্যক্তিদেরকে সমাজসেবা অফিসার বরাবর আবেদন করতে হয় । প্রাপ্ত আবেদন ইউনিয়ন কমিটি কর্তৃক সরেজমিনে যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিক তালিকা উপজেলা কমিটিতে প্রেরণ করা হয়। অত:পর উপজেলা কমিটি যাচাই বাছাই করে বরাদ্দ অনুসারে উপকারভোগী নির্বাচন চূড়ান্ত করেন। নির্বাচিত ব্যক্তিদের নামে ব্যাংক হিসাব খোলা এবং কেন্দ্রীয় হিসাব হতে ভাতার টাকা ভাতাভোগীর ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে নির্বাচিত ব্যক্তিকে অবহিতকরণপূর্বক ভাতা বিতরণ সম্পন্ন করা হয় ।
সেবা প্রাপ্তির প্রয়োজনীয় সময়:
১. নতুন বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে আবেদনের ০৩ মাসের মধ্যে;
২. পুরাতন বা নিয়মিতদের ক্ষেত্রে ০৭ কর্মদিবস।
প্রয়োজনীয় ফি/ট্যাক্স/আনুষঙ্গিক খরচ:
বিনামূল্যে
নির্দিষ্ট সেবা পেতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী প্রতিকারকারী কর্মকর্তা :
১. চেয়ারম্যান/উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদ (সংশ্লিষ্ট উপজেলা)
২. জেলা প্রশাসক (সংশ্লিষ্ট জেলা) বা সিটি করপোরেশন / পৌরসভার ক্ষেত্রে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা / আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা (সংশ্লিষ্ট প্রশাসন)
৩. কর্মসূচি পরিচালক
উপজেলাওয়ারী পরিসংখ্যানঃ
ক্রঃ নং |
উপজেলা/পৌরসভা |
২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত ভাতাভোগীর সংখ্য (জন) |
১ |
শেরপুর সদর উপজেলা |
- |
২ |
নকলা উপজেলা |
- |
৩ |
নালিতাবাড়ী উপজেলা |
- |
৪ |
ঝিনাইগাতী উপজেলা |
- |
৫ |
শ্রীবরদী উপজেলা |
- |
৬ |
শেরপুর পৌরসভা (ইউসিডি) |
৮ জন |
সর্বমোট উপকারভোগী |
৮ জন |
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস